পোস্টগুলি

সুনয়নার দু'আঁখি তে

ছবি
।। তানজিলা ইয়াসমিন ।। সে তো সেই রোদ ভরা মেঘের ভাঁজে ই সাজিয়ে দিয়েছি সন্ধ্যা আলোয়! প্রভাতের আলোয় চোখ মেলে তুমি একবার ছুঁয়ে দিও! দেখো বাতায়ন জুড়ে কি সুখের হিল্লোল তোমাকে ঘিরে, ফিরে আসা সুনয়না শুধু কাব্যের শব্দ নয়! বিচ্ছেদ মুহূর্তের জ্বলন্ত প্রদীপ শিখা কি উল্লাসে জ্বলে যায় নির্দ্বিধায় সোহাগের চঞ্চলতায়! দীর্ঘ প্রতীক্ষা কেবল কালজয়ী হতে নয় মাঝে মাঝে- সাধারণ হয়েও চিরদিন ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক! এসো হাত বাড়িয়ে অপেক্ষার আঙিনায় একদন্ড- দাঁড়িয়ে সন্ধ্যার জোৎস্নার আলো মেখে দাও সুনয়নার দু'আঁখি তে!

নোনাজলের দীর্ঘ শ্বাস

ছবি
।। তানজিলা ইয়াসমিন ।। দু-দণ্ড দাঁড়াতে চাই তোমাতে মিশে ঢেউয়ের মাঝে আঁকা ছবি জীবন্তই ভাবি, চলছি দুর্বার, গন্তব্য কখনো থমকে যায়- ফিরে আসি সকালের সোনা রোদের ছায়ায় আমি খুঁজি আমাকে সমুদ্রের নোনাজলে ঢেউ থেকে ঢেউ শুধুই অপেক্ষার দীর্ঘ শ্বাস। ফেলে আসা রাতের বুকে খুঁজে ফিরি ক্ষনিকের বেঁচে থাকার ভালবাসার নুড়ি পাথর। সময় কে মাঝে মাঝেই প্রশ্ন করে উঠি- কেন স্রোতের বুকে এতো বেদনার প্রতিচ্ছবি, মুচকি হেসে উত্তর দেয়ার ছলে বর্তমানের প্রবল গতিতে আগামীর বাস্তবতায় আগমন। একটি কোমল হাতের স্পর্শ যেন সারাক্ষণ - হৃদয়ের সবগুলো দরজায় বারবার কড়া নাড়ে, হঠাৎ যেন বলে উঠে-" তুমি আসবে তো"! আমার অপেক্ষা আরো দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হয়। সাইরেনের শব্দে শুধুই জেগে ওঠার বৃথা প্রয়াস, ফিরে তাকাই বিশাল আকাশের মুগ্ধ আলোয় শুন্যতায় ডুবে থাকা রাতগুলো জ্যোৎস্নার সুখ চোখের মায়ায় কোন এক নীল আঁচলের এলো- চুলে হেঁটে চলার রূপকথার অপেক্ষার কাব্য ছুঁয়ে যেতে যেতে কখন যে হারিয়ে ফেলি। জীবনের সকল একাকীত্বের ঘুন পোকার গল্প- ছুটি চায় মধ্যদুপুরের কড়া রোদের প্রখরতায় ডোবা মাস্তুলের বাস্তবতার ছায়া থেকে , ভিজে যেতে চায় সন্ধ্যার টুপটাপ শিহরণে বর্ষায়...

স্বাধীনতা

ছবি
।। তানজিলা ইয়াসমিন ।। স্বাধীনতা এ যেন সকাল বেলার মিষ্টি সোনা রোদের ছোঁয়া, স্বাধীনতা এ যেন দুপুর বেলার অলস সময় মাখা সুখের মায়া। স্বাধীনতা এ যেন সদ্য ফোঁটা কোনও লাল গোলাপের ঘ্রাণ, স্বাধীনতা এ যেন লক্ষ ভাইয়ের অকাতরে বিলিয়ে দেয়া তাজা প্রাণ। স্বাধীনতা এ যেন প্রেয়সির মিষ্টি ঠোঁটের পরম সুখের এক চিলতে হাসি, স্বাধীনতা এ যেন গগণ বিদারী চিৎকারে বলা সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। স্বাধীনতা এ যেন লাখো মায়ের নিত্য কান্নার ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া নীরব যন্ত্রণা, স্বাধীনতা এ যেন মুক্ত ভোরের অপেক্ষায় নব প্রজন্মের নতুন করে বাঁচার বাহানা।

একটি মাস, দুটি জন্ম

ছবি
।। হাফিজ রহমান ।। চৈত্রের পোড়ামাটি ছড়ায় উত্তপ্ত নিঃশ্বাস, সবুজে জড়ানো মাঠ নিশ্চিহ্ন প্রায়, মাঝেমাঝে বয়ে যায় প্রবল বাতাস, উত্তরে মধুমতির জলভরা বায়ু নিয়ে আসে স্নিগ্ধ পরশ! দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশ, স্বজনের মুখে নাই হাসি, তবুও সোনার দেশ, তবুও তোমায় ভালবাসি। তোমার আর্তনাদ ধ্বনি মর্মে বিঁধেছিল যার, চৈত্রের প্রখর দিনে জন্ম তাঁর, সন্তান সে এই প্রকৃতির,  সোনার বাংলার। বাংলার নদীনালা ডেকেছিল তাঁরে, বাংলার ঘাসফুল ডেকেছিল তাঁরে, বস্ত্রহীন নিরন্ন মানুষ ডেকেছিল তাঁরে, সমগ্র দুঃখিনী বাংলা ডেকেছিল তাঁরে, অনেক আদর করে বঙ্গবন্ধু নাম ধরে। চৈত্রের দাবদাহে পুড়ে যায় ফসলের সুখ, জেগে ওঠে নিরন্ন মানুষের মুখ, তদুপরি শোষকের লোলুপ চাহনি, তাই দেখে জেগে ওঠে মনে তাঁর দ্রোহ ; দেশমাতাকে ভালবেসে তাই - তিনিও দিলেন ডাক মুক্তি চেয়ে স্বাধীনতার, এই আগুনের মাসে, দুটি জনম তাই সমার্থক হয়ে আছে।

নিষ্ঠুর বর্বরতা

ছবি
।। তাহমিনা ছাত্তার ।। তোরা নিষ্ঠুর! তোরা বর্বর! তাইতো ঘুমন্ত বাঙালির উপর হানলি আঘাত নিরন্তর। পৃথিবীর ইতিহাসে নেইকো এমন স্বাধীনতাকামী জাতিরে দাবাতে হায়েনার মত করে আক্রমন। নাম দিলি তোরা অপারেশন সার্চলাইট তোদের নীল নক্সায় বাদ পড়লোনা অদ্ভুত ছিল ঢাকার সে নাইট। একযোগে তোরা হানলি আঘাত পিলখানা -রাজারবাগ-ই পি আর চুরমার, বইছে গুলির প্রপাত। চালালি গণহত্যা, মরলো দেদার আমার মেধাবীদের রক্তে ভাসে জগন্নাথ আর ইকবাল হলের করিডোর। ওরে হায়েনা, ওরে পিশাচের দল! প্রচন্ড আক্রমণে কাঁপিয়ে তুললি শাঁখারীবাজার-নওয়াবপুরের আকাশ-মাটি-জল। ইতিহাসে অসভ্য তোরা, পুড়ালি পত্রিকা অফিস,গুঁড়ালি শহীদমিনার ছি! ছি! থুথু, ইতিহাসের ক্ষমা পাবিনা তোরা। গণহত্যার এই শোকের বসন নয় শুধু বাঙালির, নয়রে একার বিশ্ব মানবতা জাগুক ক্ষোভে,করুক রোদন। আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসে চিহ্নিত হোক সকল নিষ্ঠুরতার অবসান হোক পৃথিবী জুড়ে স্বাধীনতাকামী মানুষের জয় হোক।

বিষণ্ন ঠোঁট

ছবি
।। দ্বীপ সরকার ।। তুমি যতোটা ক্ষত দেখ পিচ সাঁটা সড়কে তৃষ্ণার্ত বুক পোড়ে কাঠ খড়ি নরকে নিস্তবদ্ধ সুনসান হৃদয় , বিষণ্ন ঠোঁট ও ঠোঁটে উষ্ণতা ভরা নক্ষত্রের নোট ; পিদিমহীন আঁধার , চিলেকোঠার রাত বিরক্তিকর প্রশ্নে থেমে যায় করাত । খরচহীন ধ্যান নিয়ে ভ্যালেন্টাইন খুঁজি ছকে বাঁধা প্রেম ! সহজেই যেনো বুঝি । মিমাংসিত তীরচোখে ভুল তুমি দাগটানা খাতার ভেতর শুণ্য ভূমি ঠোঁটের দাগ ; চুম্বন বলে খ্যাত যা নিঃসৃত চাহনীর ফাঁকে ঝুলে থাকা ।

বিকাশ দাস'র একগুচ্ছ কবিতা

ছবি
( এক ) জাগতে রহো বিচ্ছেদ মাখা আলোর নিচে কালশিটে অন্ধকার আতঙ্কের গুমটিতে   রক্ত দুধের সম্পর্কের   ভার রং চটা কাঁটাতারের ঘেরায় অজশ্র ফুলের অন্তসার দুঃখ গিলে গলার ফাঁস । রোজ সকাল সন্ধ্যে আকাশ ফোটে বাতাস ছোটে   মুক্তির স্বাদ নিয়ে দু হাতে স্নিগ্ধ স্নাত রোদের তীরে ছায়ার নীড়ে পূর্বপুরুষের মাটির গন্ধ সূর্যের আলোয়   চাঁদের জোসৎনায় ।   আজ বাসাবদল মুখ থুবড়ে ফোস্কা লাগা সীমান্ত এ দেশ আমার ও দেশ তোমার পয়মন্ত মাঝখানে কঠিন বাহুর জমাট সঙ্গিন পাহারা   আর্ত চিৎকার জাগতে রহো । ( দুই ) একতার প্রচ্ছদ একার   নয় দোকার নয় এ সবার নির্জলা শ্রম ; একার   নয় দোকার নয় এ সবার অবাধ স্পর্শ ; একার   নয় দোকার নয় এ সবার নিস্বার্থ অর্ঘ ; এ সবার শ্রমের স্পর্শের অর্ঘের একতার খন্ড রঙ্গ প্রবন অন্তরঙ্গ সংহতির হৃত্পিন্ড । জলে স্থলে নদী সাগর রোদছায়া বৃষ্টির     তোলপাড় আকাশ ...