পোস্টগুলি

ডিসেম্বর, ২০১৬ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

তুমিও রাত্রির মতো

ছবি
।। গৌরাঙ্গ সুন্দর পাত্র ।। আমিও প্রেমের ঘায়ে কতবার হয়েছি আহত দেখেছি বেদনার কোলে শুয়ে আছো তুমিও রাত্রির মতো । ফসল কাটার পরেও লেগে থাকে মৃত্তিকায় ফসলের ঘ্রাণ অনেক চাওয়ার মাঝে মানুষ মরে যায় এই দেহ এই মন শুধু না পাওয়ায় সতত অম্লান । তোমাকে না পেলেও এখনো রাতের বুকে শুয়ে দেখি আমি ঘিয়ের নরম দীপ জ্বলছে কোথাও , কেউ যেন কানে কানে বলে যায় আহত করেও উজ্জ্বল ধরায় মানবের প্রেমের সম্বল , প্রেমিক মরে না কভু , মরে যায় তৃষাতুর হৃদয়ের যত কোলাহল । তুমিও রাত্রির মতো তারাগুলি জানে আজো তুমি ছিলে বেদনায় শুয়ে গায়ে ছিল জ্বর , অতি-লৌকিক পৃথিবীর বুকে প্রেম থেকে গেছে শুয়ে আছে আমার এই বুকের উপর ।

কাজল চোখ

ছবি
।। মোরশেদুল আমিন ।। আপন মনে হেঁটে চলছি অগ্রহায়ণের পাকা ধানের আইল ধরে পূবের বেলা অনেকটাই মিঠেকড়া এখন মিঠেকড়া সেই চোখের মত যে ভাষা এখনো আমার কাছে দুর্ভেদ্য গহীন সবুজ। কাজলে কাজলে মায়ায় মায়ায় নবান্নের ঘ্রান বাইলের বেড়ার ফাঁকে একজোড়া চাহনি গামছার আঁচলে মায়ার ফোঁটায় বেঁধে দিয়েছ বেঁধে নিয়েছ আপনমনে আনমনে আমার পাকা ধানের সর্বত্র সেই কাজল চোখ। ঐ চোখের গহীনে যখন সন্ধ্যা নামে ডাহুক পাখিরা ফিরে যায় আপন নিবাসে বাউলের বাঁশির সুর বাঁধে সেই চোখের দিগন্ত রেখায় ফলিত ধানের গোপন শরীরের মত তোমার কাজল চোখের গহীনে হারায় আপন মন।

সুজেটের_কান্না

ছবি
।। অমর বিশ্বাস ।। রাতের আকাশ আঁধার ছিলো ধীরে ধীরে তারারা জ্বলে উঠলো সোনালী চাঁদকে ঘিরে একে একে! ধরনীর রূপ রস যৌবন ছড়িয়ে পড়লো সহস্র প্রানের মাঝে! তাহাদের কলুষিত কাহিনী ধরিত্রীর নিভৃত কোনে, যে অসহনীয় অবলা ব্যথা---- কঁকিয়ে ওঠে ধর্ষিতা সুজেটদের চিৎকারে কে'বা তার হিসাব রাখে! দু'ফোটা অশ্রুকে শুষে নেয় তৃষিত পৃথিবী নিমেষে! পাশবিক অত্যাচারের অঙ্কটা তাই থেকে যায় চিরকালই অসমাধান! না,--------- সুজেটের সজীব অতৃপ্ত আত্মা চঞ্চল অস্থির! নিকৃষ্ট জীবদের ব্যভিচারের যোগ্য বিচারের প্রত্যাশায় আজও উদগ্রীব! ধর্ষিতা রমনীকে বাকরুদ্ধ করতে ব্যর্থ, অমানবিক ঘৃণ্য রাজনীতিরা ব্যর্থ! তোমরা কি বোবা পাথরের ম'তো চুপ থাকবে! অহরহ প্রবাহের ঘর্ষনে ধীরে ধীরে সত্যিই ক্ষয়ে যাবে! প্রতিনিয়ত সহস্র ধর্ষিতা কুসুমেরা সুজেটের তীব্র প্রতিবাদকে বিদ্রোহের দাবানলে অগ্নিসুদ্ধি করবে না!!

ভালবাসার আহ্বান

ছবি
।। আদিত্য আরেফিন ।। হৃদয়ের সমস্ত ভালোবাসা শুধুই তোমার, চিরতরে দিয়েছি মন,দিতে পারি প্রাণ। তোমার তরে লিখেছি কবিতা হাজারে হাজার, এই কন্ঠে গেয়েছি আরও কত শত গান। ভালোবাসার ডাকে দিয়ো সাড়া, এ আমার ভালবাসার আহ্বান। তাকালে একবার তোমার পানে, ভালো লাগেনা ঐ নীল আসমান। তোমার শূণ্যতায় যাই বিরহে ডুবে, চোখের কোনে আসে প্রবল বান। থেকো কাছাকাছি জীবন-মরনে, এ আমার ভালবাসার আহ্বান। শুনলে তোমার মধুর কন্ঠ, বড় বেমানান লাগে পাখির কলতান। শোন একটি অনুনয়, করোনা প্রত্যাক্ষান, ঐ কন্ঠে আমায় শুনাবে প্রেমের গান। এ আমার ভালবাসার আহ্বান। আমায় ছেড়ে, তুমি থাকলে খানিক দূরে, দিবানিশি আকুল মন করে আনছান। ভালবেসে কাছে এসো, ওগো প্রিয়া, করে দিতে সকল দুঃখের অবসান। আমার পাশে থেকো আমৃত্যু ব্যাপিয়া এ আমার  ভালবাসার আহ্বান। তুমি অন্তরে সুখের নির্মল ছায়া, প্রাণহীন নিথর দেহের চাঞ্চল্যকর প্রাণ। তোমায় ছেড়ে যায় না থাকা, প্রতিক্ষণেই মনকে বাঁধে পিছুটান। স্বপ্ন সাজাবে আমায় নিয়ে, এ আমার ভালবাসার আহ্বান।

অবাক লাগে

ছবি
।। হাফিজ রহমান ।। বারবার আক্রান্ত শরীর মন মননে চরম হতাশা নিয়েও যখন হৃদয়ের সবটুকু ভালবাসা ঢেলে তুমি বলো, ভালো থাকো বন্ধু আমার, আমি অবাক হয়ে ভাবি, কতটুকু ভালোবাসা জমে থাকে হৃদয়ে তোমার, কি বিশাল হৃদয় তোমার? চিরকাল কাঙাল আমি ভালবাসার, মিটেছে আমার তৃষ্ণা তোমার সাগরের মত অসীম ভালবাসা পেয়ে। আজ মনে হয় সবই আমি পেয়ে গেছি, যা পাওয়ার কথা তার চেয়েও বেশি! আমি আজ তৃপ্ত তাই, মনের প্রশান্তি কবিতায় গাঁথি হার!

বীরের অঙ্গ যার

ছবি
।। তাহমিনা ছাত্তার ।। চিনেছো আমায়? আমি বীরাঙ্গনা, না লজ্জা পেয়ো না, লজ্জায় মুখ ঢেকো না। এতকাল বোকার মত লুকিয়েছি মুখ আড়াল করেছি, অন্ধকারে কেঁদেছি বুঝতে পারিনি বলে। তাইতো মিলিটারীগুলো যখন করেছে উলঙ্গ আমায় সন্তানের সামনে চেতনালুপ্ত না হওয়া পর্যন্ত চালিয়েছে নারকীয় উল্লাস করেছে ছিন্ন ভিন্ন, খুবলে খেয়েছে সারা শরীর কামড়ে স্তনের বোঁটা ছিঁড়ে ফেলেছে কোলের শিশুকে আর দুধ দিতে পারিনি ওই স্তন থেকে, তখনও বুঝিনি। মহামানব বঙ্গবন্ধু বুঝেছিলেন, তাই বাঙ্কার -ক্যাম্প থেকে তুলে এনে মুক্তিযোদ্ধার পাশাপাশি আমায় বলেছেন বীরাঙ্গনা, যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার অঙ্গহানী হয়েছে, আমারও। অথচ আমি কত বোকা! লুকিয়েছি অন্ধকারে, কোনঠাসা লোকের বিদ্রুপে ত্রিপুরা গেছি লুকিয়ে, ছেঁড়া শরীরে সেলাই নিতে গর্ভপাত ঘটাতে। আমি বীরাঙ্গনা জেনে মেয়েকে আমার মেরে ফেলেছে তার শশুর বাড়ির লোকেরা। আমি নিজেকে আড়াল করেছি, গোপনে কেঁদেছি। শোন বাংলার লোকেরা, শাব্দিক অর্থেই আজ আমি আমার ক্ষতিপূরন চাই মুক্তিযোদ্ধার সম্মান চাই, স্যালুট চাই বীরের অঙ্গ আমার, লাল সবুজের পতাকায় আর বাংলার মাটিতে আমার রক্তও যে মিশে আছে।

গড়বো প্রেম- সন্ধি

ছবি
।। আদিত্য আরেফিন ।।  ঐ কাজল কালো আঁখির চাহনিতে, কেন মিশে রয় এত নিবিড় মায়া? এক পলকেই বেঁধেছ প্রেমেতে, হৃদয়ে ফেলেছ ভালোবাসার ছায়া। ঐ বাকা ঠোঁটের হাসিতে কেন এত সুখ? যে সুখের আবেশে আমি হই দিশেহারা। এক হাসিতেই ধরলো মনে প্রেমের অসুখ, আরোগ্য হবেনা মোর,তোমার প্রেম ছাড়া। ঐ দীঘল চুলে জমে আছে ঘন কালো মেঘ। ক্ষণেক্ষণেই হৃদয়ে ঝরায় অবিশ্রাম মায়া-বৃষ্টি। সে জলধারায় সিক্ত হৃদয়ের অবুঝ আবেগ, তোমাতেই ফিরে যায় অবাধ্য নয়নের দৃষ্টি। তোমার গায়ের ঘ্রানে কেন এত নেশা? সে নেশায় আমি রোজ হই মাতাল। দুচোখ জুড়ে নামে ঘোর অমানিশা, তোমাতেই বিলীন,খুঁজিনা আকাশ পাতাল। ওগো নন্দিনী, তুমি যে বড়ই প্রেমবতী, তোমার প্রেমের ফাঁদে হয়েছি বন্ধী। যদি না পাই প্রেম তোমার,হবে মোর দূর্গতি, মায়ার বাঁধনে রব বাঁধা,চল গড়ি প্রেম-সন্ধি।

ছায়াতল

ছবি
।। শুভ্র ।। পাশের বাড়ির শিউলি গাছটার দিকে চোখ পড়তেই একগাদা স্মৃতি হুড়মুড়িয়ে জেঁকে বসলো আমায়। খুব ভোরে বাবা যখন বারান্দায় পায়চারি করতেন, আর গুনগুনিয়ে রবীন্দ্রসংগীত আওড়াতেন। আমার বেলা যে যায় সাঝঁবেলাতে..... আমার ঘুম ছুটে যেত। দক্ষিণা জানালার টুকরো আকাশে দিগন্ত ভাসিয়ে বসতাম। বাবা'র কাঁধে চেপে ইস্কুলে যাওয়া, রাসপূর্ণিমার মেলায় যাওয়ার বায়না, মায়ের বকুনিতে চুপচাপ খুঁজে নিতাম বাবার ছায়াতল। প্রত্যেক বিকেলেই আমি বাবার সাথে শিউলিতলায় গিয়ে বসতাম। বাবার আঙুল গলে ছড়িয়ে দিতাম আমার হাত। বিকেল ঝুপ করে ডুব দিত। অন্ধকারের যে নিজেস্ব একছটাক ঔদার্য আছে, তা বাবা না থাকলে জানতাম না। জানোতো বাবা'র ভারী একটা বদ অভ্যাস ছিল। কিন্তু সুগন্ধী জর্দার আবেশে আমি বাবা'র খুব কাছঘেঁষে বসতাম। সেই অতিপরিচিত গন্ধ আর অদ্ভূত স্নেহঠাঁসা আলিঙ্গনে আমি যে কতো রাত্রির নিশ্চয়তা পেয়েছি! একবার বাবার খুব অসুখ করেছিল। সেই থেকে বাবা'র পৃথিবী হয়ে ওঠে চেয়ারটা। আমার খুব অপছন্দ ছিল এটা। কিন্তু দেখো আজ আমিই বারবার ফিরে আসি, চেয়ারটায়। প্রত্যেকবার আমি কাঁদি। বাবার গন্ধ পাই যে। মনের মধ্যে কি জানি অন্যরকম শূন্যতা ছেয়ে ...

আরেকটু কাছে এসো

ছবি
।। মণি জুয়েল ।। একবার কাছে এসে একটুখানি ভালোবেসে বলে যাও না ভালাবাসি মায়ায় ও চোখে চোখে এক পলক হেসে বলে যাও না আছি পাশাপাশি । দেখেছি তোমায় যেদিন, এ মন, আমি সেদিন হারিয়েছি । একমুঠোআলো আনো আমার সকাল সাজাও ও ভোরের জানালায় একটুখানি হেসে দাও হেমন্তের শিউলির মতো সুগন্ধি ছড়াও একবার কাছে এসে একটুখানি ভালোবেসে বলে যাও না ভালাবাসি কানে কানে ভালোবেসে মনের কাছে এসে বলে যাও না আছি পাশাপাশি । দেখেছি তোমায় যেদিন, এ মন, আমি সেদিন হারিয়েছি । রাতের আকাশ হয়ে তুমি স্বপ্ন বয়ে আনো.... ভাসাও তারায় তারায় মনের আকাশ হাসাও পুর্ণীমার ও রাতের মতো আলোয় জোছনায় । ভালোবেসে হেসে হেসে ঘুমপাড়ানির দেশে চলো যাই পাশাপাশি... মায়ায় ও চোখে চোখে এক পলক হেসে বলে যাও না আছি পাশাপাশি । দেখেছি তোমায় যেদিন, এ মন, আমি সেদিন হারিয়েছি ।

পিতা তোমারে স্মরি

ছবি
।। তাহমিনা ছাত্তার ।। হাত বাড়িয়ে যতই তোমায় ডাকি গো মোর পিতা, দৃষ্টি মাঝে তুমিই কেবল যোগ্যতম নেতা। তুমিই দেখালে স্বপ্ন জাতিরে স্বাধীনতার দিলে ডাক, বাঙালি চেনে তাদের ত্রাতারে দিল হায়দরী হাঁক। রুখলো বাঙালি এগুলো বাঙালি তোমার ডাকের নেশায় কেউ হল গাজী, কেউবা শহীদ ঠাঁই নিল ভূমি সজ্জায়। তাইতো তোমায় প্রাণের বেদীতে সাজাই নিরন্তর, তুমিই আমার অস্তিত্ব মাঝে রাত শেষে দেখি ভোর।

রৌদ্রের বিষণ্ণতা

ছবি
।। তানজিলা ইয়াসমিন ।। চেনা পথের রূপান্তর যেন পাহাড়ে; মৃত্তিকা পরে অপেক্ষার সবুজের ঘ্রাণ বনফুল একাই কেঁদে যায় অবহেলায় সময়ের পরিবর্তন এখন পাঁজরে রক্তাক্ত পিঁপড়ের দল ছুটে যায় ক্লান্তিহীন স্রোতে বন্ধ কপাট ঝড়ের কবলে এপাশ ওপাশ, বৃদ্ধ গল্প মাঝে মাঝে মুখ লুকায় গুহায় পড়ে থাকা বিশ্বাস হয় মৃৎসার বাস্তবতায়! উঠোনের ছায়ার পরে রৌদ্রের বিষণ্ণতা; পারিজাত ফুল সাক্ষী সেদিনের ঝরে পড়ার মিথ্যে বন্ধনের কি বাহারি রংচটা সাজগোজ সত্যি হয়তো সাদা থেকেও হঠাৎ ওঠে রং মরচে ক্ষণের স্যাঁতস্যাঁতে জঙ্গলী ছায়াপথ আঁধারেও উজ্জ্বল অবহেলার আলোর গতিপথ!!!